স্বর্ণ-বিপর্যয় PDF। স্বর্ণ-বিপর্যয় গ্রন্থটি কাজী আনোয়ার হোসেন এর লিখিত এবং সেবা প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত মাসুদ রানা থ্রিলার সিরিজের অন্তর্ভুক্ত একটি বাংলা গুপ্তচরবৃত্তীয় কাহিনী বিষয়ক জনপ্রিয় বই। আপনি আরেফিন ইবুকস (Arefin eBooks) এর মাধ্যমে স্বর্ণ-বিপর্যয় PDF বইটি সহজেই পড়তে ও ডাউনলোড করে সংগ্রহে রাখতে পারবেন। এই গ্রন্থ ছাড়াও আপনার প্রিয় যেকোনো বইয়ের পিডিএফ পেতে আরেফিন ইবুকস ভিজিট করুন। বইটি ভালো লাগলে কমেন্টে আপনার মতামত জানাতে এবং বন্ধুদের বইটি শেয়ার করতে ভূলবেন না।
মাসুদ রানা বাংলাদেশের জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক কাজী আনোয়ার হোসেনের সৃষ্ট একটি কাহিনী-চরিত্র। ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ধ্বংস পাহাড় প্রচ্ছদনামের প্রথম গ্রন্থটি থেকে শুরু করে সেবা প্রকাশনী থেকে মাসুদ রানা সিরিজে এই চরিত্রকে নিয়ে চার শতাধিক গুপ্তচরবৃত্তীয় কাহিনীর বই প্রকাশিত হয়েছে। সিরিজের প্রথম দুইটি বই বাদে বাকিগুলো ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষার বইয়ের ভাবানুবাদ বা ছায়া অবলম্বনে রচিত। মাসুদ রানার চরিত্রটিকে মূলত ইয়ান ফ্লেমিংয়ের সৃষ্ট জেমস বন্ড চরিত্রটির বাঙালি সংস্করণ হিসেবে গণ্য করা হয়।
স্বর্ণ-বিপর্যয় বইটি পড়ে থাকলে আপনার রিভিউ কমেন্টের মাধ্যমে পাঠকদের জানান, একে অপরকে বই পড়তে ও রিভিউ দিতে উৎসাহিত করুন।
“বুড়োর সাথে দেখা করতে এলে যা হয়, বুকের ভেতর হাতুড়ির বাড়ি পড়তে শুরু করেছে রানার। ঢোক গিলে, ঠোঁটে জিভের ডগা বুলিয়ে সাহস সঞ্চয়ের চেষ্টা করল সে”।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় স্পাই থ্রিলার সিরিজ ‘মাসুদ রানা’র নায়ক মেজর রানা তার বস অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রাহাত খানকে এতটাই ভয় পান যে, প্রতিটি পর্বেই রানাকে যখন রাহাত খানের মুখোমুখি হতে হয়, তখনই এরকম দুচার লাইনের বর্ণনা থাকে।
এই সিরিজটি গত অর্ধ শতাব্দী ধরে অব্যাহতভাবে প্রকাশ করে আসছেন সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার কাজী আনোয়ার হোসেন।
১৯৬৬ সালের মে মাসে প্রথম প্রকাশিত হবার পর এই নিয়ে ৪৪৬টি পর্ব বের হয়েছে সিরিজটির।
গড়ে প্রতি ৪০ দিনে বেরিয়েছে একটি করে পর্ব।
মাসুদ রানাকে বলা যায় বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরনো, দীর্ঘস্থায়ী ও জনপ্রিয় সুপার-হিরো চরিত্র, যার পক্ষে অসম্ভব বলে কিছুই নেই, যে কখনো পরাজিত হয় না, যার মৃত্যু হয়না।
আর এই রানার বসের চরিত্রে রয়েছেন মে. জে. রাহাত খান।
তিনি ‘বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স’ বা বিসিআই নামে একটি কাল্পনিক গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ ব্যক্তি।
ঢাকার মতিঝিলে এই সংস্থার প্রধান অফিস।
এখানে এসেই সবসময় বসের কাছে রিপোর্ট করতে হয় রানাকে।
রাহাত খানকে সবসময়েই বর্ণনা করা হয়েছে অত্যন্ত জলদগম্ভীর এক অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল হিসেবে, যার ঠোঁটে সবসময় থাকে টোব্যাকো পাইপ বা চুরুট।
এই রাহাত খান নামটি লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন নিয়েছেন রক্তমাংসেরই এক মানুষের কাছ থেকে।
তিনি বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত কথাসাহিত্যিক এবং প্রবীণ সাংবাদিক রাহাত খান।
কাজী আনোয়ার হোসেনের সহপাঠী ও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু মি. খান।
জীবনের একটি সময় সেগুনবাগিচায় মি. হোসেনের বাড়ি কাম প্রকাশনা সংস্থাতেই কাটিয়েছেন তিনি।
মাসুদ রানা সিরিজের রাহাত খান অত্যন্ত রাশভারী একজন মানুষ, সারাক্ষণ তিনি ধূমপান করেন। বাস্তবের রাহাত খান ক্ষেত্র বিশেষে রাশভারী, কিন্তু মূলত একজন আমুদে মানুষ।
বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবং দৈনিক বর্তমান নামে একটি সংবাদপত্রের উপদেষ্টা সম্পাদক।
তার সঙ্গে আমার কথা হয়, মতিঝিলের একটি বহুতল ভবনে দৈনিক বর্তমান পত্রিকার কার্যালয়ে বসে।
“আমি মোটেও সেই মেজর জেনারেল রাহাত খান নই। আমি শুধুই রাহাত খান”।
মি. খান বলছিলেন, তার বন্ধু কাজী আনোয়ার হোসেন এই সিরিজগুলো লেখার এক পর্যায়ে তাকে একটি পর্ব দেখতে দিয়েছিলেন।
তখন তিনি মফস্বলের একটি কলেজে শিক্ষকতা করছেন।
ওই পর্বটি পড়েই তিনি আবিষ্কার করেন, তার নাম ব্যবহার করা হয়েছে বইয়ের একটি চরিত্র হিসেবে।
“দ্বিতীয়বার যখন দেখা হল তার সাথে তখন তাকে বললাম, এটা কী করেছেন আপনি? তখন তিনি আদরের সঙ্গে আমাকে বললেন, চোপ”।
“আমি বললাম, আমাকে মানায় নাকি, এরকম একটা স্বাস্থ্য নিয়ে মেজর জেনারেল! থ্রি স্টার জেনারেল! তবে যাই হোক, এটা ছিল লেখকের ব্যক্তিগত পছন্দের ব্যাপার। তিনি আমাকে খুব ভালবাসতেন। বিশ্বাস করি এখনো সেই ভালবাসা তার অন্তরে আছে আমার জন্য”।
কিন্তু মাসুদ রানা সিরিজগুলোতে রাহাত খানকে যেমন রাশভারী চরিত্র হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে বাস্তবের রাহাত খানও কি সেরকম?
মি. খান বলছেন, “কিছুটা মিল আছে। আমি কখনো কখনো কোন কোন মহলের কাছে অত্যন্ত রাশভারী। আমার ঘরে সাহসের অভাবে ঢুকতে পারতো না, এরকম বহু ঘটনার কথা আমি পরে শুনেছি”।
“কিন্তু আমি এমনিতে আমুদে মানুষ। আর যখন লিখতে বসে যাই তখন নিবিষ্টভাবে লিখি আমি”।
মাসুদ রানা চরিত্রটির নামও লেখক রক্তমাংসের মানুষের কাছ থেকেই নিয়েছেন।
সেবা প্রকাশনী থেকেই বের হওয়া রহস্য পত্রিকা থেকে জানা যাচ্ছে, নায়কের নামের ‘মাসুদ’ অংশটি লেখক নিয়েছেন প্রয়াত গীতিকবি মাসুদ করিমের নাম থেকে।
আর মেবারের রাজপুত রাজা রানা প্রতাপ সিংয়ের নাম থেকে নিয়েছেন ‘রানা’ অংশটি।
মাসুদ রানা সিরিজে আরো বহু নিয়মিত চরিত্র রয়েছে। যেমন: সোহেল, সোহানা, রুপা, রাঙার মা, গিলটি মিয়া, ভিনসেন্ট গগল, জর্জ হ্যামিলটন। এদের নামও কি তাহলে বাস্তবের চরিত্র থেকে নেয়া?
সাংবাদিক এবং কাজী আনোয়ার হোসেনের বন্ধু রাহাত খান বলছেন, নওয়াব (কাজী আনোয়ার হোসেনের ডাক নাম) যাদের ভালবাসতেন তাদের নামগুলো বিভিন্ন ভাল ভাল চরিত্রের নাম হিসেবে ব্যবহার করতেন।
“আর তার সঙ্গে যারা শত্রুতা করেছে, বেছে বেছে ওদের সবাইকে ভিলেনের নাম দিয়েছেন”।
মাসুদ রানা সিরিজের কয়েকজন নিয়মিত এবং দুর্ধর্ষ ভিলেনের একজন কবির চৌধুরী। তিনি একজন প্রতিভাবান বিজ্ঞানী কিন্তু বিপথে যাওয়া মানুষ।
এছাড়া নিয়মিত ভিলেনদের তালিকায় আরো রয়েছেন খায়রুল কবির (কবির চৌধুরীর ছেলে), উ সেন প্রমুখেরা।
[মাসুদ রানা: কতটা কল্পনা, কতটা বাস্তব লিখাটি বিবিসি নিউজ হতে সংগৃহীত]
এডমিন বার্তা : আপনি আরেফিন ইবুকস (Arefin eBooks) এ পাবেন সকল জনপ্রিয় দেশি বিদেশী লেখকদের বাংলা পিডিএফ (Bangla PDF) বই, খুব সহজেই ডাউনলোড করতে পারবেন অথবা অনলাইনে পড়তে পারবেন। আপনার পছন্দের বইটি আরেফিন ইবুকস (Arefin eBooks) এ পেতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। আপনার কোনো অভিযোগ বা পরামর্শ থাকলেও আমাদের জানান, আমরা আপনার পরামর্শকে শ্রদ্ধাভরে মূল্যায়ন করি।